হোলি’র দোল
হোলির অর্থ শ্বেত এর সাজে, রং এর ছিটে ফেলা
রঙিন ছিটে রাঙায়ে যে মন, ভাসায় সুখ এর ভেলা
হোলির মানে সর্ব বিবাদ, তাকে তুলে রাখা
শত্রু রা সব এই দিনটায়, হোক না প্রানের সখা
হোলির অর্থ হলো যে ভাই, বিষন্নতার ছুটি
ছড়িয়ে আছে খুশির রাশি, আয় না গিয়ে লুটি
হোলির মানেই চুপি চুপি, রং এর বালতি খানা
উল্টে দেওয়া তার মাথাতেই, (যার) বদন গোমরা পনা
হোলি মানে সুযোগ খোজা, কেমন করে ওরে
হার্ট থ্রব এরই কাছে যাবে, রং এর আড়াল ধরে
মনের আশা, বুক এর বলে, সবাই বলিয়ান
একটি দিন তো ভয় না থাকুক, সবাই পালোয়ান
হোলি মানি দামড়া গুলোর, শিশু হতে চাওয়া
কার রং ত়া বেশি কড়া, প্রমান করতে যাওয়া
রং এর শেষে, কাদা, গোবর, সবই ওঠে জাতে
ভাং এর নেশায়, কাদা বা রং, কি এসে যায় তাতে
হাজার হাজার কৃষ্ণ রাধা, যেন পাখির পাল
ঘুরছে ফিরছে, উড়ছে দেখি, সবুজ এবং লাল
বাবা মা এর সংশয়ী মন, মানতে যে না চায়
এদিক তাকান, ওদিক তাকান, মনে বড় ভয়
গোয়েন্দা দের ছড়াছড়ি, দাদা, জ্যাঠা, কাকি
ছোট ভাই আর বোন্ গুলো কে, কঠিন দেওয়া ফাকি
এদিক ওদিক ছোটাছুটি, বাড়ির আড়াল খোজা
সবার চোখে ধুলো দিলে, তাতেই বুঝি মজা
সবার উর্ধে হোক না হোলি, সম্প্রীতির এ গান
হোলির অর্থ হয়ে উঠুক, ভালবাসার তান
যাক না ধুয়ে মলিনতার, জীর্ণ অবয়ব
থাকবো মোরা আনন্দেতে, হবেই কলরব
নববর্ষ
এই পৃথিবী খাচ্ছে যে পাক, সূর্যের চার ধারে
নববর্ষ আসবে ঠিকই বছর বছর ধরে
বড় প্রশ্ন, নববর্ষ, তবে হলো কার?
সর্বংসহা এই পৃথিবীর , না তোমার আমার!
তত্বকথা ভুলে বরং, দেখি এবার ফিরে
নববর্ষের মানে টা কি, এত বছর ধরে
নববর্ষ মানে বড়দের করি প্রনাম
আগ্রহ টা থোল খরচে, দেখছি পরিমান
বছর বচ্ছর তা বেড়েছে, আগে ছিল দশ
আজ তা ৫ শতে আছে, মন মানে না বশ
হাজার হাজার টাকার চেয়ে, ৫ শত টা দামী
গুছিয়ে সেটা সরিয়ে রাখি, খোশ মেজাজে আমি
নববর্ষ মানে সাঁঝে হালখাতা তে যাওয়া
কালেন্ডের আর মিষ্টি প্যাকেট, ভুরি ভুরি পাওয়া
কোনো টা প্রকৃতি’র ছবি, কোনো টা মা কালী
তারিখ গুলোয়, চোখ টা না যায়, দেখব পেরেক খালি
নববর্ষ মানে বন্ধু সাথে কোলাকুলি
একটি দিনে পুরনো সব, রাগ অভিমান ভুলি
নববর্ষ মানে মেসেজ, রঙিন এবং সাদা
Whatsapp আর SMS এ, পাবই গাদা গাদা
নববর্ষ মানে নতুন জীবন যাপন লেখা
সিগারেট টা ছাড়া এবং রোগা হওয়া শেখা
নববর্ষ মানে প্রচুর ভালো কথা ভাবা
বছর নাকি যাবেই এমন, বোকা, না কি হাবা!
আমার কাছে নববর্ষ, একটি মাইল ফলক
একটি বছর কাটল আরো, রাখলাম কোনো ঝলক?
কেমন করে আগামী দিন, আরো মসৃন করি
বিপদ বাধা পড়ুক পিছলে, আমি সে পথ ধরি
নববর্ষ যোগায় যে বল, আরো ভালবাসার
সব দুখঃ ছাপিয়ে গিয়ে, গান টা শোনায় আশার
সব কালিমা থাক না দুরে, একটি দিন এর তরে
কাল সকালে আবার যেন, দেখি এ দিন ওরে
IPL
ভারতবর্ষে অনেক পার্বন, বহু ধর্মের বাস
ক্রিকেট ধর্ম সবার উপর, একেবারে খাস
এই ধর্মে মন্দির, চার্চ, মসজিদ নেই বটে
বিশালাকার স্টেডিয়াম এ, ইহার প্রসার ঘটে
ধর্মভীরু জনগণ এর নানান রকম মত
বোকা বাক্সে ধর্ম পালন, বিদ্বান অভিমত
চাযের কাপে তুফান তোলা, ধর্ম অধিকার
ভিন্ন দেব এর ভক্ত হওয়া, স্বাভাবিক ব্যাপার
এমন একটি ধর্ম পালন, ভিন্ন পুজো’র লয় এ
নবতম পুজো, তাকে, আইপিএল কহে
দেশের ভিন্ন শহর গুলো, তাদের নামেই দল
দল এর নেশা ভক্ত জন কে করে টল মল
বলিউড এর বাদশা যে তা’র, কলকাতা তেই প্রীতি
কে কে আর গড়েন তিনি, অন্য দলের ভীতি
দিল্লি, মুম্বাই, বেঙ্গালুরু এর নামে যে দল আছে
হ্য্দ্রাবাদ, পুনে, রাজকোট থাকে তার ই পাশে
বেঙ্গালুরু, কম সে কিসে, আছে দিব্যি সেও
আট দল এর এই জোট এর মাঝে, পাঞ্জাব কেও পেও
প্রতি বছর দল গুলো ভাই, প্লেয়ার খুজতে যায়
বিশ্ব খুঁজে বাছা বাছা প্লেয়ার তুলে নায়
দল পোক্ত করে সবাই খেলার মাঠে নামে
ফাল্গুনে তা শুরু যে হয়, বৈশাখে সে থামে
মাস দুই এর জন্য জীবন, ধর্মে সমর্পিত
চোখ ধাধানো খেলা’র মাঝে, নাটক আরোপিত
এই বছর ও হযেছে শুরু, হলো সবে বোধন
বিগত সব আবর্জনা, হযেছে করা শোধন
নাচ এবং গান এর মাঝে, খেলা মূল্য পাক
ভক্ত কুল থাকুক সুখে, বিদ্বেষ সব যাক
ভেলেন্তি পুজো
Valentines’ day has not become a Bengali Festival as well. Hence, deserves the “Pujo” suffix with a “Banglacized” name – Velenti. 🙂
চতুর্দশ এই পার্বন, তার নাম ভেলেন্তি পুজো
পুরোহিত এর নেই প্রয়োজন, যজ্ঞে দিতে ঘি
আগুন নিজ ধর্মে জ্বলে, পুরুষ হোক বা স্ত্রী
ধার করা এই পার্বন আজ, নিলো আপন করে
উচ্চবিত্তে’র পেরিয়ে উঠোন, সবার ঘরে ঘরে
ফুলের বাজার রমরমা আজ, গোলাপ হলো রাজা
কান বিদারী বাজনা ছেড়ে, মিষ্টি সুরে বাজা
নগরের সব বিশেষ স্থান আজ, ভীষণ জনাকীর্ণ
প্রেমের গুতোয় পকেটের হাল, হবেই বেজায় জীর্ণ
প্রেমের আমি, প্রেমের তুমি, প্রেমে ভুবন ভরা
একটা প্রেমে ল্যাং খেলে তাই, অন্য নায়ে চড়া
দেখনদারী প্রেমের মাঝে, যাসনে ওরে ভুলে
ছোট্ট বোনের দেওয়া রাখি, রাখলি কোথায় তুলে
কিংবা ভাইয়ের শখ মেটানো, এই মাসে কি হবে?
বুড়ো বাবা’র চশমা আনার, তারিখ যেন কবে?
এগ চিকেন রোল এর পরে, কাটলেট ফিশ ফ্রাই
আকণ্ঠ গেলার পরেও, আইস ক্রিম টা চাই
মা জননী ভাত টি বেড়ে, অপেক্ষা তে রত
ছেলের পরে খাবো আমি, এমনটা তার ব্রত
প্রেয়সী’র দেওয়া গোলাপ, এখন তরতাজা
রাত ফুরোলে মুষড়ে পরে, পেয়েছে যেন সাজা
চিরকালীন শুধু মাত্র, মায়ের অপার স্নেহ
ভেলেন্তি পুজো’র প্রসাদ, তাকেই তোমরা জেনো
মহালয়া’র গল্প
Mahalaya is the “Kick-off” event of our biggest festival, Durga Puja. Thought of summarizing the history and various stories involving this, in MY WAY! 🙂
আশ্বিনের এই শারদ প্রাতেঃ, থাকুক সবাই দুধে ভাতে
বেতারে তে হচ্ছে আবাহন
বিরু ভদ্র’র উদ্দাত্ত স্বর, করছে আপন, যে ছিল পর
মিষ্টি ছুটি’র কোলে অবগাহন
পিতৃপক্ষ নিলো বিদায়, দেবীপক্ষ চোখ মেলে চায়
এলো বুঝি নতুন সে এক ভোর
অমাবস্যা’র অন্ধকারে, ঢাকা কত অজানা রে
জানতে চাইলে,করবো নাকো জোর
স্বর্গীয় সব আপনজনে, আকুতি যে দুই নয়নে
অপেক্ষাতে, পিন্ড হবে দান
না হতে চায় কর্ণ কেহ, দানবীর সে, রাখলো দেহ
জীবদ্দশায় ভুলে পিন্ড দান
সেই অপরাধ করলো তাড়া, স্বর্গ দেশে হতচ্ছাড়া
বোর্ডিং আছে, ফুড যে তাহার নাই
অতএব সাবধান, জীবদ্দশায় এই বিধান
পিন্ড দান অবশ্যই হওয়া চাই
পুরানে আছে কথিত, মহিষ রাজা’র ভয়ে ভীত
যখন হলো, সমগ্র মেদিনী
শিব ঠাকুরের ভাৰ্য্যা, পারো, করেন প্রচুর শক্তি জড়ো
রূপ টি ধরেন ভুবন মোহিনী
মহিষ রাজ্যে এলেন তিনি, সিংহ পৃষ্ঠে অবস্থিনি
রূপের ছটায় মহিষ বাবু কাত
পাঠালেন সান্ত্রী সেনা, আনতে ডেকে, সেই ললনা
বিবাহ সম্পন্ন হতে হবে রাত
দূর্গা দেবী স্মিত মুখে, জানান তাদের বড় সুখে
আছেন তিনি স্বামী সন্তান নিয়ে
রেগে আগুন মহিষাসুর, ভয়ে সবাই ছুটলো যে দূর
ধরে বেঁধে আনতে হবে গিয়ে
মহালয়া’র সাঁঝ আঁধারে , দানব সেনা ধরলো ঘিরে
দেবী তবু থাকেন হাসি মুখে
দশটি হাতে দশভুজা, করেন শুরু মারণপূজা
শত্রু নিধন করেন মহা সুখে
এই না শুনে মহিষাসুর, ধরেন জোরে বেতালা সুর
যুদ্ধক্ষেত্রে তিনি ধেয়ে যান
প্রস্তুত যে দশভুজা, উপহারের অস্ত্রে সাজা
অনায়াসে আক্রমণ ফেরান
তুমুল যুদ্ধ হলো সেথায়, দশটি দিন এর কোর্স তা হেথায়
মহিষাসুর হলেন কুপোকাত
বিজয়িনী দূর্গা মাতা, হলেন বিশ্বজগৎ ত্রাতা
মুছে দিয়ে অরাজক সে রাত
মহালয়ায় হয়ে শুরু, দশমী তে উড়ু উড়ু
মা জননী সারেন যে সব কাজ
সন্তানদের কাঁদিয়ে দিয়ে, বিসর্জনের বাদ্যি দিয়ে
কৈলাসেতে যাবেন চলে আজ
মহালয়া’র গল্প সারা, কোমর বেঁধে নাম রে তোরা
হতে হবে চক্র অবতার
পুজো’র সংখ্যা কম কিছু নয়, নানা রকম থিম এ যে হয়
লুটে নে ওই আনন্দভাণ্ডার
পুজোর ক্ষণ
শিউলি গন্ধ, পাচ্ছো কি আজ, মন টা কি আনচান?
শ্বেতশুভ্র কাশফুল কি, আনছে গলায় গান?
নবরূপে সাজতে কি আজ, চাইছে বড় মন?
উত্তর টা হ্যাঁ যদি হয়, এটাই পুজো’র ক্ষণ
সাত সকালেই শয্যা ছেড়ে, উঠতে ইচ্ছে হয়?
আকাশবাণী’র মহালয়া বাঁধছে কি আজ লয়?
বীরেন ভদ্র হন যদি আজ, ভালোবাসা’র জন
নিশ্চিত করে জেনো তবে, এটাই পুজোর ক্ষণ
সুনীল আকাশ, হালকা বাতাস, মিষ্টি একটু রোদ
তারই মাঝে শুভ্র মেঘ টি, জাগায় যদি বোধ
অবুঝ মিষ্টি ভালোবাসায় রাঙে যদি মন
রাঙা মনে নিয়ো বুঝে, এটাই পুজোর ক্ষণ
চতুর্দিকে দেখো যদি, অলস কাজের গতি
অধৈর্য্যতা’র কু-আবেগে পড়ছে যদি যতি
গরিব গুর্বো দেখে যদি কাঁদতে চায় এ মন
অশ্রু মুছে বুঝতে হবে, এটাই পুজোর ক্ষণ
আড়ি গুলো আজ যদি হয় বেজায় দ্বিধাগ্রস্ত
ভাবের ঘরে দেখো যদি ভিড় জমেছে মস্ত
আড়ি থেকে ভাবের যাত্রা, হলে মরণপণ
কোলাকুলি সেরে বোঝা, এটাই পুজোর ক্ষণ
আনন্দ আর হাসির মাঝে, একটু সময় নিয়ে
গরিব ঢাকি’র মলিন ধুতি, বদলে দিতে গিয়ে
মনের পাখি যদি জোড়ে, সুখের আলাপন
প্রগলভতা করবে প্রমান, এটাই পুজোর ক্ষণ
পাড়ার পুজোয় কোমর বেঁধে, বালতি হাতা নিয়ে
খিচুড়ি আর লাবড়া পরিবেশন করতে গিয়ে
বৃদ্ধ ভিখারি’র আকুতি, কাঁদায় যদি মন
খাইয়ে সুখ টা বাতলে দেবে, এটাই পুজোর ক্ষণ
পাশের বাড়ি’র মিস্টু যখন, গাইবে স্টেজ এ গান
আদো গলায় উচ্চারণ টা ভরায় যখন প্রাণ
হাত তালি তে ভরায় আসর, যখন গুণীজন
চওড়া বুক টা বুঝিয়ে দেবে, এটাই পুজোর ক্ষণ
বিসর্জনের বাজনা যখন, মুচড়ে দেবে বুক
কান্না গলায় পাকবে দলা, লুক্কায়িত মুখ
বিষন্নতা লুকিয়ে রেখে, হাসবে জনগণ
আলিঙ্গনের আবেশে যে মিটবে পুজোর ক্ষণ